





রূপালী পর্দায় নায়ক-নায়িকাদের প্রেম, ভালোবাসা, রোমান্টিকতা দেখে আমরা মুগ্ধ ভাবাবেগে আপ্লুত হই ।






তাদের মুখের আদর্শ আর নীতিবাক্য শুনে মোহাবিষ্ট হয়ে নিজের অজান্তেই তালি বাজাই । কিন্তু বাস্তব বড়






নির্মম, নিষ্ঠুর । কিছু কিছু মেকআপবিহীন মুখ চলচ্চিত্রের লাইট-অ্যাকশন-ক্যামেরার বাইরে বড়ই অসুন্দর আর স্বার্থপর।






২০০৮-এর এপ্রিল হতে দীর্ঘ ৯ বছর চুপ থেকেও শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে মুখ খুলতে বাধ্য হলেন অপু বিশ্বাস।






২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জন্ম নেওয়া সন্তানকে দেখতে পর্যন্ত যাননি পিতা । হয়তোব বলিউড বাদশা কিং
শাহরুখ খানের ছেলের অনুকরণেই বাচ্চাটির নাম রাখা হয়েছে আব্রাহাম খান জয়। কিন্তু বাস্তব জীবনে শাকিব খান পারলেন না শাহরুখ খানের মতো পিতা হতে। কেবল জন্ম দিলেই পিতা হওয়া যায় না, দায়িত্ব নিতে হয়, ত্যাগ লাগে।
অপু বিশ্বাস কাঁদছে, বিশ্বাস ভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়ে সন্তানের স্বীকৃতি আদায়ের দাবীতে। না রুপালী পর্দার কোনো দৃশ্য নয়, তিনি কোনো গ্ল্যামরাস নায়িকা নন আজ, কেবলই সন্তানের অধিকার আদায়ে একজন অসহায় ‘মা’। ছাড় দিতে দিতে ক্লান্ত অপু শেষ মুহূর্তে নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে টেলিভিশনের আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া কোনো উপায়ও ছিল না কারণ সন্তানের ভবিষ্যৎ তার পরিচিতি আর অধিকার।
চলচ্চিত্রের নায়ক হওয়া যতটা সহজ বাস্তব জীবনে নায়ক হতে পারা ঠিক ততোটাই কঠিন। আজকের দিনে অপু বিশ্বাসের ভেঙ্গে পড়া জানান দেয়, কেবল ক্যারিয়ার নয় অন্তরালে আরও কাহিনীর বসবাস। বুবলি নামের মেয়েটির কথা অনেকবার এসেছে কিন্তু মেয়েটিতো জানতোই না শাকিব বিবাহিত। তাছাড়া এই দায়বদ্ধতা শাকিবের একার, বুবলির নয়।
বোম্বের নায়ক শাহরুখ খান তিন সন্তানের পিতা হওয়ার পরও জনপ্রিয়তায় কোনো কমতি নেই বরং তাদের সাথে নিয়ে নিয়মিত টেলিভিশনসহ সমস্ত পাবলিক মিডিয়াতে আসছেন। তবে আমাদের দেশে শাকিব খানের কিসের ভয়? নাকি কেবলই অপুকে ঠকানোর জন্য অন্য কোনো সস্তা ষড়যন্ত্র?
একজন নায়ককে মানুষ বড় পর্দার বাইরের জীবনেও নায়ক হিসেবেই দেখতে চায়। তার মাঝে সবকটি ভালোত্বের সমন্বয়ে একজন আদর্শ, নীতিবান, সৎ মানুষকে খুঁজে ফিরে । চাওয়ার সাথে পাওয়ার সংঘর্ষ হলে ধ্বংস অনিবার্য। দর্শক তখন তাকে নায়ক বলে মানতে নারাজ।
অপু বারবার একটি কথা বলেছেন নিজের নয় শাকিবের ক্যারিয়ারের কথা ভেবেছেন। অপুর সব কথা সত্যি হলে নায়ক হিসেবে শাকিবের আর গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। কারণ তার নায়কোচিত রোমান্টিক ভালো মানুষীর আড়ালে এক প্রতারক ভিলেনের অবয়ব।
ফুটফুটে চাঁদের কণাকে উপেক্ষা করে শাকিব নিজেকেই ভীষণ বিতর্কে ফেলে দিয়েছেন। আর অপু বিশ্বাসও কেন মাতৃত্বকালীন নাজুক এবং একই সাথে গর্বের সময়টিতে নিজেকে নিয়ে লুকোচুরি খেললেন অনেক প্রশ্নই মনে এসে ভিড় করছে। এক বছর হল শাকিবের সাথে কথা নেই তার মানে সন্তান জন্ম নিয়েই কি দ্বন্দ্বের সূত্রপাত! দুজন পূর্ণ বয়স্ক অভিজ্ঞ মানুষের মাঝে দ্বন্দ্ব কিংবা অপছন্দ হতেই পারে কিন্তু সেই আঁচ যেন সন্তানের গায়ে না লাগে।
অপু বিশ্বাসের বক্তব্য নিউজ টুয়েন্টিফোরে যখন দেখি তখন শিশুটির চাহনি নজর কাড়ে। রাতে অন্য একটি চ্যানেলে যখন শাকিবের টেলিফোন বক্তব্য শুনছি, তার অযৌক্তিক অসংলগ্ন নির্দয় বক্তব্য শুনে মনে এসেছে একটাই শব্দ,’হারামজাদা’।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল তুলতুলে নিষ্পাপ আব্রাহাম খান জয়ের ভবিষ্যৎ, একটি নিশ্চিত জীবন। ৬ মাস বয়সে প্রতিকূলতায় চলতে চলতে আর কোনো বিতর্কে না জড়াক বরং নিশ্চয়তায় বেড়ে উঠুক, আদর, স্নেহ, মমতার স্পর্শে ওর জীবনটা কানায় কানায় ভরে উঠুক। আব্রাহামের জন্য হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা ও শুভ কামনা।