‘যারা গুণী মানুষ, লিজেন্ড তারা একে একে সবাই চলে যাচ্ছেন। আমরা কাকে নিয়ে থাকবো? টেলি সামাদ ভাই ছিলেন চলচ্চিত্রের একজন লিজেন্ড। তিনিও চলে গেলেন। আমি নিজে দেখেছি তার জনপ্রিয়তা। যেমন ভালো অভিনেতা ছিলেন, তেমনি শক্তিমান অভিনেতা ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাকেও ধরে রাখা গেল না। আমরা কাকে নিয়ে থাকবো?’
এসব কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন একসময়কার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অঞ্জনা সুলতানা। বরেণ্য চলচ্চিত্র অভিনেতা টেলি সামাদের জানাজায় রবিবার সকালে এফডিসিতে এসেছিলেন তিনি। সেখানে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপে টেলি সামাদ সম্পর্কে দু-চার কথা বলে স্মৃতিচারণ করেন অশিক্ষিত, জিঞ্জির ছবির এই নায়িকা।
অঞ্জনা বলেন, টেলি সামাদের সঙ্গে ১০০ এর বেশি সিনেমায় কাজ করেছি। দেশ ও দেশের বাইরে গিয়েছি অনেকবার। তাকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। তার সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। তিনি সবাইকে খুব ভালোবাসতে জানতেন। মানুষ পৃথিবীতে আসবে যাবে এটা সত্য। কিন্তু টেলি ভাই একটু আগেই চলে গেলেন।
তিনি বলেন, টেলি ভাই শুধু অভিনেতা ছিলেন না, গান করতেন ভালো। একজন ভালো চিত্রশিল্পী ছিলেন। শুটিংয়ে আউটডোরে গেলে তিনি অবসরে ওইসব জায়গার দৃশ্যগুলো রংতুলিতে আঁকতেন। তার বাসার ড্রয়িং রুম ভর্তি নানা শিল্পকর্মে। আমরা শুধু একজন ভালো অভিনেতা নয়, ভালো চিত্রশিল্পীকেও হারালাম।
টেলি সামাদ ভাই খুব উৎফুল্ল মানুষ ছিলেন। তার সঙ্গে এতগুলো বছর আমার পরিচয়, কিন্তু আমি তাকে কখনো রাগতে দেখিনি। সবসময় হাসিমুখে কথা বলতেন। তার মধ্যে অনেক দুঃখ কষ্ট ছিল। সেগুলো কাউকে বুঝতে দিতেন না। আমি কোনোদিনই টেলি সামাদ ভাইকে ভুলতে পারবো না। আমি চাইবো, নতুন প্রজন্মও তাকে মনে রাখুক। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি- বলেন চিত্রনায়িকা অঞ্জনা সুলতানা।
শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুর দেড়টা নাগাদ স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদ। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। ধানমন্ডি, পশ্চিম রাজাবাজার, মগবাজারের দিলু রোড, এফডিসি এই চার জায়গায় জানাজা শেষে রবিবার বাদ আসর টেলি সামাদকে দাফন করা হচ্ছে তার পৈতৃক নিবাস মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার নয়াগাঁও গ্রামে।