





ঢাকাই ছবির স্টাইল আইকন হিরো সালমান শাহ। এখনও এই নায়কের বিষয়ে জানার আগ্রহ রয়েছে তার ভক্তদের।






একটা বিষয় কী জানেন তার ভক্তরা? সিনেমায় মেকআপ ছাড়াই শুটিং করতেন দেশীয় ছবির এই






সুপারস্টার। সালমানের মৃত্যুর ২২ বছর পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন নায়কের স্নেহধন্য মতি।






তার ভাষ্য, ভাই কখনও মেকআপ ব্যবহার করতেন না। আমার কাছে তার একটা ফ্লাস্ক থাকতো। আর সেটার মধ্যে একটা ভেজা কাপড় থাকতো। ভাই শটের আগে মুখটা ভালো করে মুছে নিতেন। প্রতিটি ছবিতেই তাকে ভিন্ন ভিন্ন গেটআপে দেখা গেলেও মেকআপ নিতেন না। শুধু নিজের প্রথম ছবি ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’-এ মেকআপ নিয়েছিলেন তিনি।
সালমান শাহ অভিনীত ‘স্নেহ’ ছবির প্রোডাকশনবয় ছিলেন মতি। তখন মতির বয়স ১২। প্রথম দিনের শুটিংয়ের সময় সালমানকে পানি দেয়ার জন্য গেলে আলাপ হয় সালমান-মতির। শিশু মতিকে সালমান শাহ তখন থেকেই নিজের সঙ্গে রেখেছিলেন।
এছাড়া সালমানের প্রিয় একটা শখ ছিল গাড়ি চালানো। শুটিং শেষ করে রাত ২-৩টা পর্যন্ত গাড়ি চালাতেন তিনি। শুধু তাই নয় সব সময় হাই স্পিডে গাড়ি চালাতেন সালমান।
সালমান শাহ পরবর্তী সময়ে যারা চলচ্চিত্রে নায়ক হওয়ার জন্য এসেছেন তারা প্রত্যেকেই বলেছেন, সালমান শাহ-ই ছিলেন তাদের অনুপ্রেরণার প্রধান উৎস।
অনেকে মনে করেন, অল্প সময়ের জন্য এসেছিলেন বলেই এত দ্যুতি ছড়াতে পেরেছিলেন সালমান, কেটে গেছেন দাগ। যে দাগ তার প্রস্থানের এত বছর পরেও সমুজ্জ্বল। তার অনুপস্থিতি আর অকাল প্রস্থান আজও পোড়াচ্ছে বাঙালির মন। তাকে বলা হয় ৯০ দশকের শ্রেষ্ঠ নায়ক।
চলচ্চিত্রে অভিষেকের আগের বছর অর্থাৎ ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট তার খালার বান্ধবীর মেয়ে সামিরা হককে বিয়ে করেন সালমান শাহ। সামিরা ছিলেন বিউটি পার্লার ব্যবসায়ী। তিনি সালমানের দু’টি চলচ্চিত্রে তার পোশাক পরিকল্পনাকারী হিসেবেও কাজ করেন। দাম্পত্য জীবনের পাঁচ বছরের মাথায় ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎই সালমানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। এদিন ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার দেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হলেও তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য রয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির মাধ্যমে ঢাকাই সিনেমায় অভিষেক হয় সালমান শাহ’র। মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন ২৭টি চলচ্চিত্রে। তার অভিনীত ছবির মধ্যে রয়েছে- ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘দেন মোহর’, ‘তোমাকে চাই’, ‘বিক্ষোভ’, ‘বিচার হবে’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘আশা ভালবাসা’, ‘জীবন সংসার’, ‘মহামিলন’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘আঞ্জুমান’, ‘কন্যাদান’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘প্রেম যুদ্ধ’, ‘স্নেহ’, ‘সত্যের মৃত্যু নাই’, ‘সুজন সখী’, ‘তুমি আমার’, ‘প্রিয়জন’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘বুকের ভিতর আগুন’, ‘প্রেম পিয়াসী’। সালমান শাহ অভিনীত প্রায় সবগুলো চলচ্চিত্রই ব্যবসায়িক সফলতা লাভ করে।