





কথা নেই বার্তা নেই, বুঝে উঠার আগেই অনেকটা জোর করে বাবা বিয়ে করিয়ে দিল রিজভীকে।






বিয়ের আগে সে নীলার সাথে কথা বলাতো দুরে থাক, ভাল করে একটু দেখতেও পারল না। যে






মেয়ের সাথে তার পুর্বে পরিচয় ছিল না, এমন কি একটু কথাও হয় নি, তার সাথে সারা জীবন






সংসার করতে হবে, এমনি ভাবনায় রিজভী এখন জর্জরিত, তার বাসর রাতে। নিজের নিয়তিটাও






যেন সে মেনে নিতে পারছিল না। তাই ফ্লোরে আলাদা বিছানা করে ঘুমোতেও চেয়েছিল। কিন্তু মশার যন্ত্রনায় সেটাও সম্ভব হয় নি। পুরো ফ্লাটে তাদের দুজনকে একা রেখে সবাই চলে গেছে বলে- মশার কামড়ে জেগে থাকা ছাড়া আর কোন উপায়ও রইল না। এরই মধ্যে খানিকটা ক্ষুধা অনুভব হয়, রিজভীর। মানবিক হোক আর নৈতিক কারনেই হোক, নীলাকে সে জিঙ্গেস করে কিছু খাবে কিনা। নীলার চুপ করে বসে থাকে। হ্যা কিংবা না কোন উত্তর না পেয়ে, নিজেই ফল নিয়ে খেতে থাকে। হঠাৎ তার মধ্যে ভাবনার উদয় হয়। মেয়েটি তার প্রশ্নের উত্তর দিল না কেন?
সে কি কানে শোনে না। সে কি তাহলে বোবা? ভাবতে থাকে, সত্যি যদি বোবা হয় তার কি গতি হবে? এই ভাবনায় সে সিউরে উঠে। মনে হয় যেন, যে ঘটক এমন বোবা মেয়ের প্রস্তাব নিয়ে তার বাবার কাছে এসেছিল, তাকে ধরে মারে। এভাবে রিজভীর মনে নব বিবাহিত বউ নীলাকে নিয়ে নানা দুশ্চিন্তার উদ্রেগ হয়। মেয়েটি যদি পুরুষ ছেলের কন্ঠের অধিকারী হয়। আবার তা না হয়ে, যদি ল্যাংড়া হয়।
একে একে এমন চিন্তা যখন তার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে, তখনি নিলার মোবাইলে একটি ফোন আসে। নীলা ফোন রিসিভ করলে আগের দুশ্চিন্তা দুর হয় ঠিকি, কিন্তু এত রাতে ফোনে ”আই লাভ ইউ” বলা দেখে, তার আরেক ভাবনার সৃষ্টি হয়। মেয়েটির নিশ্চই কোন বয় ফ্রেন্ড আছে। বউ কানা, ল্যাংড়া, বোবা ভাল ছিল। কিন্তু বয়ফ্রেন্ডওয়ালা মেয়ের সাথে কি করে সে সংসার করবে? ঘটকের বাচ্ছা যে তার এমন সর্বনাশ করে দিল, তারে এখন কি করা যায়। এমন ভাবনায় ভাবতে ভাবতে, নীলার কাছ থেকেই সে এক সময় জানতে পারে, ফোন করা লোকটি ছিল তার মা। দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে নিশ্চিতে ঘুমিয়ে যায়। কিন্তু এই ঘুম বেশীক্ষনের ছিল না। হঠাৎ নীলা তাকে ঘুম থেকে ডেকে উঠিয়ে, মারতে চায়। কারন একটি মেয়ে বধু সেজে সারা রাত বসে আছে, তার চিন্তা না করে. তার সাথে সে কোন কথা ভাল করে না বলে, কি করে নিশ্চিন্তে ঘুমোয়। রিজভীর এবারের ভাবনা- বোবা, কানা, ল্যাংড়া এমনকি বয়ফ্রেন্ডওয়ালা মেয়েও ভাল ছিল। কিন্তু পাগল নিয়ে কি করে সে সংসার করবে?