





‘ইচ্ছেনদী’-র মেঘলা নামেই এখন তাঁকে চেনেন বাংলা টেলিভিশনের দর্শক। রূপে লক্ষ্মী, গুণে






সরস্বতী-র উদাহরণটা তাঁর সঙ্গে বেশ ভাল মানায়। সুন্দরী, মিষ্টভাষী সোলাঙ্কি রায় দূরভাষে আড্ডা






দিলেন এবেলা ওয়েবসাইটের সঙ্গে। তোমার নামটা কে রেখেছেন? সোলাঙ্কি: বাবা। উনি কি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের…






সোলাঙ্কি: হ্যাঁ, হ্যাঁ, রাজকাহিনি থেকেই নামটা রাখা। তুমি পড়েছ? সোলাঙ্কি: হ্যাঁ, হ্যাঁ, ছোটবেলায়, বহুবার। সেই সোলাঙ্কি রাজকুমারীর কথা পড়ে, বড় হয়ে কি তোমার মনে হয়েছে, তোমার সঙ্গে মিল রয়েছে রাজকুমারীর? সোলাঙ্কি: আলটিমেটলি যখন বড় হয়েছি তখন রূপকথাটা মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে আর কী। আমি শুনেছি, মেঘলার মতো তুমিও নাকি খুব ভাল গান করো? সোলাঙ্কি: না না এটা খুব ভুল, একেবারেই উল্টোটা আর কী। ওইটা জাস্ট আমার জন্য নয়! হবি কী? অবসরযাপন?
সোলাঙ্কি: বই পড়ি, গান শুনি, সিনেমা দেখি। আড্ডা মারতে ভাল লাগে। মুশকিল হচ্ছে অবসরটা পাওয়াই যায় না। যেটুকু পাওয়া যায় ওই বন্ধুবান্ধব, ফ্যামিলি… পড়াশোনা তো পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়ে… সোলাঙ্কি: হ্যাঁ গ্র্যাজুয়েশনে তাই। তার পর মাস্টার্স করেছি ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তোমার কি অ্যাকাডেমিকসে বা জার্নালিজমে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল? সোলাঙ্কি: সেরম কিছু ছিল না। পড়াশোনা করছিলাম। এমফিল একজ্যাম দিয়েছিলাম। তার পর হঠাৎ করে অভিনয়টা শুরু করি। খুব একটা প্ল্যান করে কেরিয়ারটা তৈরি করা নয়। আই টুক ইট অ্যাজ ইট কেম। অভিনয়ে এলে কীভাবে? সোলাঙ্কি: তখন যাদবপুরে সবে মাস্টার্স কমপ্লিট করে এমফিল-এর এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়েছি। ক্যাম্পাসেই বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারছিলাম, তখনই একজন ভদ্রলোক এসে বললেন ইটিভি-তে একটা শো আসছে, ওরা লিড খুঁজছে। উনি জিজ্ঞাসা করলেন আমি ইন্টারেস্টেড কি না। তার পর আমি অডিশনে গেলাম। তার কিছুদিন বাদে ওরা ফোন করে কনফর্ম করল যে, আই অ্যাম ডুয়িং দ্য শো। সেটাই আমার প্রথম কাজ, ‘কথা দিলাম’। তার পরেই ‘ইচ্ছেনদী’।
অভিনয়ের দিক দিয়ে ‘রোল মডেল’ বা প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী কারা? সোলাঙ্কি: এরকম বলা খুব মুশকিল। আমি ওয়র্ল্ড মুভিজও দেখি। পছন্দের অভিনেতা-অভিনেত্রীও অনেকে রয়েছেন কিন্তু আলাদা করে কারও নাম বলাটা মুশকিল। ভাল অভিনয় ব্যাপারটাই আমার ভাল লাগে। তুমি তো এমফিল করছিলে… সোলাঙ্কি: না এমফিলের এন্ট্রান্স দিয়েছিলাম, করবও ভেবেছিলাম। কিন্তু যতদিনে রেজাল্ট বেরলো, তার মধ্যে ‘কথা দিলাম’ শুরু হয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে কি আবার পড়াশোনা শুরু করতে চাও? সোলাঙ্কি: না, এখনও সেরম কিছু ভাবিনি। কখনও যদি মনে হয়, হয়তো পিএইচডি করব। অভিনয়ে যে এলে, সেটা নিয়ে বাড়িতে কোনও সমস্যা হয়নি? বাবা-মার দিক থেকে? সোলাঙ্কি: ইনিশিয়ালি হয়েছিল। আমি ওদের হঠাৎ করে জানাই। খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে হঠাৎ করে এরকম একটা প্রোপোজাল গেলে অদ্ভুতভাবেই রিঅ্যাক্ট করে। আমার বাবা-মাও প্রথমদিকে মেনে নিতে পারেনি। কিন্তু আস্তে আস্তে যখন দেখল যে আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা খুব সিরিয়াসলি কাজ করছি, আমার যত ভাললাগা তৈরি হয়েছে, আমার বাবা-মারও এই কাজটার প্রতি ভাললাগাটা তৈরি হয়েছে। আর এখন তো ওই সাপোর্টটা ছাড়া সম্ভবই হয় না। এখন ওঁরা খুব খুশি।
এই যে এতক্ষণ শ্যুট করো, আমি এগজ্যাক্টলি জানি না সেটা কতক্ষণ… সোলাঙ্কি: হ্যাঁ, সতেরো-আঠেরো ঘণ্টা তো হয়েই যায়। এমনও হয়েছে যে ২৪ ঘণ্টা শ্যুট করেছি মানে একদিন ভোর পাঁচটা থেকে পরের দিন ভোর পাঁচটা।
তার পরেও এত ফ্রেশ লাগে কী করে তোমাকে অনস্ক্রিন? সোলাঙ্কি: হা-হা-হা, সেইটা আমি জানি না। আসলে রেগুলার তো এরকম থাকে না। দেখো, সমস্ত কাজেই তো এমার্জেন্সি সিচুয়েশন থাকে। আর আমাদের হাউসে কিন্তু মোটামুটি শনি-রবিবার আমরা ছুটি পাই। খুব তাড়াতাড়ি যে কল টাইম থাকে তাও নয়। মানে বেশ ফেভারেবল কন্ডিশনে শ্যুটিংটা হয়। টেলিভিশন থেকে চলচ্চিত্র জগতে আসার ইচ্ছে আছে? সোলাঙ্কি: ভীষণই ইচ্ছে আছে। ভাল ছবি, ভাল ডিরেক্টর…। এখনও সেরকম কিছু অফার আসেনি, তার কারণ আমরা তো কনট্র্যাক্টে কাজ করি তাই কিছু রেস্ট্রিকশন থাকে। কিন্তু সুযোগ এলে অবশ্যই ভাল ছবি করব। প্রথম সিরিয়াল শুরু হওয়ার আগে কোনও অভিনয়ের ওয়র্কশপ করেছিলে? সোলাঙ্কি: না না, আমি কোনওদিন অভিনয়ের অ-এর সঙ্গেও যুক্ত ছিলাম না। নাচটা করতাম ছোটবেলা থেকে। স্কুল-কলেজে যেমন সবাই করে, আর পাঁচজনের মতো, সেরকমই টুকটাক ছিল। প্রথম সিরিয়ালের আগে একটা ওয়র্কশপ হয়েছিল বটে কিন্তু পুরোটা কাজ করতে করতে শেখা। আর এই শেখাটা পুরোটাই কিন্তু আমার কো-অ্যাক্টরদের সঙ্গে। আই হ্যাভ গট সাম ওয়ান্ডারফুল কো-অ্যাক্টরস উইথ মি। আমার আগের সিরিয়ালেও, এই সিরিয়ালেও অসম্ভব ভাল কয়েকজন সিনিয়ারকে পেয়েছি। ‘কথা দিলাম’-এ মন্টুদা মানে সুমন্ত্র মুখোপাধ্যায়কে পেয়েছি, চৈতী ঘোষালকে পেয়েছি আবার এখানে লাবুদি, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, নীলদা… অ্যান্ড দে হ্যাভ হেল্পড মি আ লট। এখনও শেখাটা একেবারেই এবিসিডি লেভেলে আছে, প্রত্যেকদিনই শিখি আমার ডিরেক্টরের থেকে, কো-অ্যাক্টরদের থেকে।বলতে পারো আমি খুব লাকি!
তুমি কি ক্লাসিক্যাল ড্যান্স ফর্ম কিছু শিখতে? সোলাঙ্কি: হ্যাঁ, ইনিশিয়ালি ভরতনাট্যম শিখতাম কিন্তু আমার টিচার মারা যান। তার পরে কত্থক শিখেছি। কিন্তু নাচটা ছেড়ে দিতে হয় একটা অসুবিধের জন্য। আমার একটা লোয়ার ব্যাক ইনজুরি হয়। তার পর থেকে ডিসকন্টিনিউ করতে হয় তবে মাঝে-মধ্যে পারফর্ম করি এখনও। বিশেষ করে অ্যাওয়ার্ড ফাংশনগুলোতে পারফর্ম করতে খুব ভাল লাগে।
তুমি তো যাদবপুরের ছাত্রী। আর ওই ক্যাম্পাসের ছাত্রীদের উপর তো গোটা কলকাতার ক্রাশ আছে! ক্যাম্পাসের ভিতরে-বাইরে ক’জন প্রপোজ করেছে তোমাকে সেটা জানতে চাই! সোলাঙ্কি: হা, হা, হা… এই রে আমি তো গুনিনি কখনও! তবে হ্যাঁ, অনুরাগীরা বেশ কিছু সংখ্যায় ছিল, এখনও আছে। ভালই লাগে। দেখো, অ্যাটেনশন তো সকলের ভাল লাগে, আমারও ভাল লাগে। তার মধ্যে কোনও মনের মানুষ খুঁজে পেয়েছ? সোলাঙ্কি: হ্যাঁ, দেয়ার ইজ সামওয়ান স্পেশাল। তোমার মতে, আইডিয়াল লাইফ পার্টনার কেমন হওয়া উচিত? সোলাঙ্কি: কমপ্যাটিবিলিটি! ওটাই শেষ, ওটাই শুরু। যার সঙ্গে আমি থাকব সারাজীবন, তার সঙ্গে কমপ্যাটিবল হওয়াটা খুব প্রয়োজন। তোমার মনের মানুষ যিনি, তাঁর সঙ্গে সম্পর্কটা অফিসিয়াল হতে চলেছে কি? সোলাঙ্কি: এক্ষুণি ভাবছি না। তবে ভবিষ্যতে তো আই রিয়েলি ওয়ান্ট টু সেটল ডাউন উইথ হিম। আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে? সোলাঙ্কি: হ্যাঁ, তার মধ্যেই। সবাই বলে সোলাঙ্কি খুব ভাল মেয়ে! তুমি কী বলো? সোলাঙ্কি: ভাল মেয়ে বলে? হা-হা-হা… আমি জানি না আমি কতটা ভাল, কিন্তু চেষ্টা করি কিছুটা ভাল হওয়ার আর কী। এটা কিন্তু অনেকের থেকেই শুনেছি। সোলাঙ্কি: থ্যাঙ্ক ইউ, একটা বিশাল থ্যাঙ্ক ইউ ছাড়া আর কী বলতে পারি বলো? আমি জানি না কেন তাদের মনে হয়েছে ভাল। কিন্তু… আই ট্রাই টু মিক্স উইথ পিপল উইথ আটমোস্ট অনেস্টি আর কী! -এবেলা