





এফডিসির গেটের ফাঁকাটা আর একটু ছোট হয়েছে। সাধারনের যাওয়া আসার জন্য তাই আর






একটু ঝামেলা পোহাতে হয়। ভাবছেন গেট ছোট করা হয়েছে? না, তেমন কিছু নয়। গেটের






কপাটটা ইদানিং একটু কম ফাঁকা রাখা হয়। হুট করে কিন্তু আপনি ভিতরে যেতে পারবেন না। দারোয়ান আছেন, সাধু সাবধান।






এবার আসি মূল গল্পে। ভার্সিটি পড়ুয়া রাজু। ঢাকায় খুব বেশিদিনের নয়। ইচ্ছে এফডিসির শুটিং দেখবেন। হুট করে গেট দিয়ে ঢুকতে গেলেন। থামিয়ে দিলেন দারোয়ান। আরে কই যান?
রোজকার ঘটনা। এ ঘটনার শুরু যে কবে হয়েছিল আর শেষ যে কবে হবে তার ইয়াত্তা নেই। তাহলে ঘটনাটা বলি। কই যান?
‘এইতো ভাই শুটিং দেখতে ভিতরে’ বললেন আগত উৎসুক দর্শনার্থী।
দারোয়ান মুখ বিকৃত করে ‘না না। ভেতরে যাওন যাইবে না। সবার জন্য খুলে রাখছে নাকি এই সদর দরজা? বাইর হোন কইতাছি।’
পাশ থেকে আরেক জন দারোয়ান আস্তে করে বললেন, যাওয়া যাবে তবে ট্যাকা দেওন লাগব। দেবার পারবেন?’
আগত ছেলেটা একটু বিপদে পড়লেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘কত টাকা?’
দারোয়ান ছেলেটাকে একটু আড়ালে নিয়ে গেলেন। চোখের আড়াল হলো না, তবে তাদের কথা আর শোনা গেল না। ছেলেটা কিছু দিয়ে ম্যানেজ করে ফেললো।
এই দৃশ্য এফডিসির গেটে যারা মাঝেমধ্যে যায়, সকলেরই চেনা। এফডিসির ভেতরে ঢুকলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নেন দারোয়ানরা।
টাকার পরিমাণটা ভিন্ন ভিন্ন লোকের কাছে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যার। যার কাছ থেকে যেমন আদায় করতে পারেন। সেভাবেই হাতিয়ে নেন তারা। দিন দিন তাদের চাহিদা যেন আরও বেড়ে যাচ্ছে।
তবে এর থেকে চতুর কিছু লোকও আছে। তেমনই একজনের দেখা মিললো তখন। সেও এই দৃশ্য দেখছে ভিতরে দাড়িয়ে। সে হেসে বলছে বোকারা এমনই ধরা খায়।
তার কাছে প্রশ্ন হলো ছেলেটার আর অন্য উপায়ও বা কি আছে? উত্তর দিলেন,‘ আমি এফডিসি প্রায়ই আসি। যদি অচেনা হতে যাই। তখনই ওরা এমন ধরে। সোজা বলে দেই অমুক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। ব্যাস, ওরা আর আটকায় না। ওরা এমন নতুন পেলেই ধরে। আমাকেও প্রথমবার ধরেছে। পরে এক ভাই এই ট্যাকটিস শিখিয়ে দিয়েছে। এখন দিব্যি চলাফেরা করি’।
কিছুক্ষন পর সেই ছেলেটির সঙ্গে দেখা। নাম বললেন রাজু। আজই প্রথম এসেছে এফডিসিতে। ঢাকার স্বনামধন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। অনেক শখ শুটিং দেখার। বড় ভাইয়ের কাছ থেকে শুনেছে এফডিসিতে গেলে বড় বড় নায়ক নায়িকার শুটিং দেখা যায়। তাই এসেছে। কিন্তু এসেই হেস্তনেস্ত হতে হল দারোয়ানের কাছ থেকে।
জিজ্ঞেস করলাম দারোয়ান তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন কিনা? জানালেন,‘ একশো টাকা নিছে। চাইছিলো পাঁচশো। ভাগ্যিস পকেটেই ছিল না। মানিব্যাগ দেখিয়ে একশোতে রাজি করিয়েছি’
যদিও এফডিসির ভেতরে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ। দারোয়ানরা টাকা খেয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে এফডিসিতে। দারোয়ানদের এ বিষয়ে প্রশ্ন করতে গেলে, বড় তারকার মতো তারাও এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ সম্পর্কে এফডিসির দায়িত্বশীল একজনের কাছে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি বলেন,‘ এটা অনেক পুরনো অভিযোগ। এর আগেও অনেকে বহিস্কার হয়েছে। মূল সমস্যা সবাইকে হাতেনাতে ধরা হয় না। আর ওরা বলে দশ বিশ টাকা চা খাওয়ার জন্য নেই। অনেক সময় মানবিকতার খাতিরে মাফও করে দেই’।