Home / মিডিয়া নিউজ / আব্বা সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে বাসায় ফিরতে বলতেন : কিংবদন্তী ববিতা

আব্বা সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে বাসায় ফিরতে বলতেন : কিংবদন্তী ববিতা

সন্তানের কাছে বাবা মানে আত্মবিশ্বাস। বাবার অনুপ্রেরণাতেই সন্তানেরা সামনে এগিয়ে যায় নির্ভাবনায়।

তাই বাবাকে আলাদাভাবে সম্মান জানাতে জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বের ১১১টি দেশে পালন করা

হয় বাবা দিবস। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ সেপ্টেম্বরের প্রথম রোববার বাবা দিবস

পালন করে থাকে। অধিকাংশ দেশের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশ বাবা দিবস পালন করছে আজকেই।

দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন ফরিদা আক্তার ববিতা।

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী এই অভিনেত্রী বরাবারই বাবাকে নিজের আদর্শ বলে প্রচার করেছেন। বলেছেন, কাজের জন্য যতটুকু তিনি আজ প্রশংসা কুড়িয়েছেন

তা কেবল বাবার দেয়া অনুপ্রেরণার কারণেই সম্ভব হয়েছে। তাই ববিতা মনে করেন, যে কোনো সন্তানের কাছে বাবা হলো সুপার হিরো। বাবা কিভাবে কথা বলেন, কাজ করেন সব কিছু শিশু বয়স থেকেই সন্তানরা অনুসরণ করেন। এ জন্য বাবাদেরও সন্তানদের সামনে অনেক হিসেব করে চলতে হয়। কারণ বাচ্চারা বাবার ভালোটা যেমন নিজের মধ্যে ধারণ করে, ঠিক তেমনি মন্দটাও লোফে নেয়।

বাবা দিবসে প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী বলেন, বাবাকে সম্মান জানানোর জন্য একটি বিশেষ দিনকে বাছাই করায় সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ এক সাথে তাদের প্রিয়

বাবাকে সম্মান জানাতে পারেন। তবে বাবা দিবস এলেই যে আব্বাকে মনে পড়ে আমার কাছে কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। আমার জীবনজুড়ে জড়িয়ে আছেন আমার আব্বা। সবাই বলেন, আমি না কী আমার আব্বার আদর্শে বেড়ে উঠেছি। কিন্তু আদৌকী আমি আব্বার আদর্শে বেড়ে উঠতে পেরেছি, এটা আমার নিজেরই প্রশ্ন। আমার বিয়ের মাত্র চার মাস পরেই আমার আব্বা এ এস এম নিজাম উদ্দিন আতাইয়ুব ইন্তেকাল করেন। যে কারণে মানসিকভাবে সেই সময় অনেক ভেঙ্গে পড়েছিলাম। বাবাকে ঘিরে প্রত্যেক সন্তানেরই অনেক স্মৃতি থাকে।

সাফল্যের মূলমন্ত্রে রয়েছেন বাবা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, আব্বা সবসময় আমাদের ছয় ভাই বোনকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা বলতেন। আমার জীবনের

সাফল্যের মূলমন্ত্র কিন্তু আব্বার কাছ থেকেই পাওয়া। এই যে আমি এতো পরিপাটি থাকি, গুছিয়ে থাকার চেষ্টা করি, এটা আব্বার কাছ থেকেই পাওয়া। আব্বা যখন অফিস থেকে আসতেন তখন আমরা সবাই আব্বাকে পান বানিয়ে খাওয়াতাম। আব্বা তখন বেশ আয়েশ করে পান খেতেন। আব্বার পা টিপে দিতে দিতে তখন সব আবদার করতাম। আব্বা আমাদের সেই আবদার রাখতেন। আবার আব্বা অনেক সিনেমা দেখতেন। সিনেমা দেখে দেখে আমাদেরকে মজার মজার গল্প বলতেন এবং সেই সব গল্পে আব্বা আমাদের অভিনয় করতে বলতেন।

ববিতা বলেন, সেখান থেকেই কিন্তু অভিনয়ে আমার অনুপ্রেরণা আসা। পরবর্তীতে যখন আমি সিনেমার নায়িকা হিসেবে কাজ শুরু করি, তখনও আব্বা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দিতেন।

সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় অভিনয়ের আগে আব্বাই সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে চিঠি আদান প্রদান করতেন ইংরেজিতে। শুটিং-এর সময় সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে আব্বার চমৎকার একটি সম্পর্ক তৈরী হয়েছিলো।

শৈশবের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমার ইংরেজি শেখার খুব শখ ছিলো বিধায় আব্বা আমাকে ছোটবেলাতে একটি ডিকশনারী কিনে দিয়েছিলেন। আমি তখন প্রথম শ্রেণীতে পড়ি।

বাগেরহাটে থাকি সবাই। সবাই আমাকে রেখে মামার বাড়ি যাবে বেড়াতে। আমি বুদ্ধি করলাম কীভাবে আব্বাকে রাজি করানো যায়। আব্বা সন্ধ্যা নাগাদ বাসায় ফেরার সময় আমিই হারিকেন নিয়ে আব্বাকে এগিয়ে আনতে গেলাম। আমাকে দেখে আব্বা ভীষণ খুশি, কারণ তখন বিদ্যুৎ ছিলোনা। অন্ধকারে আব্বাকে এগিয়ে আনতে গিয়েছিলাম। আব্বা তখন খুশি হয়ে বললেন কী চাও মা? আমি বললাম আমাকেও সঙ্গে মামার বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে। আব্বা রাজি হলেন। আব্বা আমার জীবনের আদর্শ। তাই আমার ইচ্ছে আমার মৃত্যুর পর যেন বনানী কবরস্থানে আব্বার কবরেই যেন আমাকে দাফন করা হয়।

Check Also

আবারও ডি এ তায়েবের নায়িকা মাহি

নতুন আরও একটি সিনেমায় কাজ করতে যাচ্ছেন ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা মাহিয়া মাহি। সেই সিনেমার নাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *