





টানা দুই দশক নায়ক হিসেবে সব শ্রেণির দর্শকের কাছে জনপ্রিয় থাকলেও বর্তমানে চলচ্চিত্রের ভিলেন






হিসেবেই সবাই তাকে চেনেন। লোকাল প্রোডাকশন ছাড়াও নিয়মিত যৌথ প্রযোজনার ছবিতেও অভিনয়






করছেন তিনি। বলছিলাম ‘শেষ ঠিকানা’ খ্যাত নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক অমিত হাসানের কথা।






আসছে ১৫ ডিসেম্বর দেশব্যাপী রেকর্ড সংখ্যক সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত মালেক আফসারির পরিচালনায় প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘অন্তর জ্বালা’।
এ ছবিতেও তাকে ভিলেন হিসেবেই পাওয়া যাবে। ছবিটি নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী ছবির প্রযোজক ও নায়ক জায়েদ খান ও চিত্রনায়িকা পরীমনিও। মুক্তির ঠিক আগে আগে ছবিটি নিয়ে তাদের প্রচারণাও তুঙ্গে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেও প্রচারণা বা সদ্য ‘অন্তর জ্বালা’র প্রেস কনফারেন্সেও আমন্ত্রণ পাননি অমিত হাসান, এমন অভিযোগই তার। অন্তর জ্বালাসহ বর্তমানে কাজের ব্যস্ততা এবং চলচ্চিত্রের এই সংকটকালে করণীয় বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি-
আপনার অভিনয়ে নতুন ছবির ব্যস্ততা নিয়েতো কিছু শোনা যাচ্ছে না বহুদিন…?
আসলে মাঝখানে দুইমাস আমেরিকায় ছিলাম। ফ্যামিলি নিয়ে নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছি। এখন নতুন সিনেমার চেয়ে কিছু পুরনো ছবি আটকে আছে সেগুলো শেষ করছি। মনতাজুর রহমান আকবরের ‘মাই ডার্লিং’-এর শুট করার কথা। কিন্তু শাকিব-অপুর মধ্যে ঝামেলার জন্য ছবিটি একটু আটকে আছে।
আপনার কি মনে হয়, শাকিব-অপুর মধ্যে যে সিচুয়েশন চলছে তাতে এই ছবি শেষ হবে আদৌ?
অবশ্যই ছবির কাজ শেষ হবে। প্রডিউসারতো আর বসে থাকবে না। সে এখানে টাকা ইনভেস্ট করছে, সে কাজটা চাইবে। তারাতো কার ব্যক্তি জীবনে কী হলো এগুলো নিয়ে মাথা ঘামাবে না। আসলে এই ছবিটির শুটিং নিয়ে মিটিং হচ্ছে। দেখা যাক, শিগগির একটা সমাধান আসবে।
১৫ ডিসেম্বরতো আপনার অভিনীত ‘অন্তর জ্বালা’ ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। প্রচারণাও বেশ ভালো চলছে। কিন্তু প্রচারণায়তো আপনাকে দেখা যাচ্ছে না। কারণ কী?
প্রচারণায় কাকে রাখবেন, কাকে রাখবেন না এটা পুরোটাই নির্ভর করে প্রডিউসার আর নির্মাতার উপর। কিন্তু ‘অন্তর জ্বালা’ মুক্তি পাচ্ছে, ওরা আমাকে ডাকেনি। একবার বলেওনি। তারা হয়তো চিন্তা করেছে অমিতের আর দরকার নাই। যদিও এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আমাকে ডাকলে আমি অবশ্যই ছবির প্রচারণায় তাদের সাথে থাকতাম। এখন যদি তারা বলে যে, আমাকে প্রমোশন করতে ডেকেছে কিন্তু আমি যায়নি। বুঝবেন, এটা তারা সত্য বলছে না।
শুধুতো প্রমোশনে নয়, ক’দিন আগে ‘অন্তর জ্বালা’র সংবাদ সম্মেলনেও আপনাকে দেখা যায়নি। কেউ আমন্ত্রণ জানায়নি?
না। প্রেস কনফারেন্সেও আমাকে ডাকেনি। দেখুন, প্রতিটি ছবি একজন অভিনেতা বা ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষের কাছে সন্তানের মতো। যেহেতু আমাদের পেশায় এটা। আমাকে যদি মালেক আফসারি বা জায়েদ খান ডাকতো, তাহলে আমি অবশ্যই যেতাম। তারা হয়তো আমাকে প্রয়োজন মনে করেনি। অথচ এই ছবিতে কিন্তু আমি মোটেও অগুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করিনি।
অন্তর জ্বালার প্রচারণায় নেই অমিত হাসানডিরেক্টর কিংবা নির্মাতার সঙ্গে কি আপনার মনমালিন্য হয়েছে?
না। আমার সাথে কারো কোনো ক্লেশ হয় নাই। কিন্তু তারা কেন আমাকে প্রয়োজন মনে করেনি এটা তাদের জিজ্ঞেস করেন।
যৌথ প্রযোজনার প্রায় সব ছবিতেইতো আপনাকে দেখা যায়। কিন্তু চালবাজসহ ইদানিংকার যে ছবিগুলো হতে যাচ্ছে, কোথাও আপনি নেই…?
‘চালবাজ’ ছবিতে আমাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, কিন্তু যে চরিত্রে আমাকে অভিনয় করতে বলা হয়েছিল সেটা আমার সাথে যায় না। আপাতত লোকাল ছবিতেই ব্যস্ত আছি।
প্রায় দুই যুগ ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের নানা উত্থান পতনের সাক্ষী আপনি। এমনকি নায়ক থেকে এখন ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করছেন নিয়মিত। বর্তমান চলচ্চিত্রের অবস্থা কী আপনার চোখে?
আমি এক কথায় বলবো, বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য এখন দুঃসময় যাচ্ছে।
এটাতো সবাই বলে। কিন্তু এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ আসলে কী হতে পারে?
বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের প্রধান সমাধান হবে,দেশে সিনেমা হলের পরিবেশ ঠিক করতে হবে সবার আগে। ছবির বাজেট বাড়াতে হবে। ইদানিং ডিজিটাল হয়ে যা হয়েছে, সবাই কম পয়সায় সিনেমা নামিয়ে ফেলতে চাইছে। এসব করে আরো চলচ্চিত্রের বারোটা বাজছে। আর ভালো গল্পের সিনেমা করতে হবে। এখন দর্শককের চোখ খুলে গেছে, যা ইচ্ছে তাই দিলে এগুলো চলবে না এখন। আর প্রপার আর্টিস্ট কাস্টিং লাগবে।-চ্যানেল আই