





অল্প সময়ের ক্যারিয়ারে কাজ করেছেন গুটিকয়েক বিজ্ঞাপনে। সংখ্যায় কম হলেও






মানে ও অভিনয়ের স্বকীয়তায় জনপ্রিয়তার আকাশ ছুঁয়েছিলেন চৈতি






’শোবার ঘরটা নীল হোক’, ’আকাশের মতো’ বার্জার পেইন্টসের বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত






এই






সংলাপটি সবার কাছে খুবই পরিচিত। নব্বই দশকে প্রচারিত এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়তা
পেয়েছিলেন লামিয়া তাবাসসুম চৈতি ও মনির খান শিমুল। সেসময়ে যে ক’জন মডেল ও অভিনেত্রী দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম চৈতী।
জুঁই নারকেল তেল, বার্জার পেইন্টসের বিজ্ঞাপন দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন এই সুন্দরীতমা। ঐ সময়টাতে প্রচার হওয়া বিজ্ঞাপনগুলোও ছিলো বেশ নান্দনিক। যার ফলে খুব দ্রুতই সেগুলো দর্শকপ্রিয়তা পেতো। সেইসব বিজ্ঞাপনের বদৌলতে অনেক মডেল ও অভিনয়শিল্পীরাই পেয়েছেন তারকাখ্যাতি। । স্বল্প এই ক্যারিয়ারে ২০০০ সালে বিটিভিতে প্রচার হওয়া ’ছবির মতো মেয়ে’ শিরোনামে মাত্র একটি টেলিফিল্মে দেখা গিয়েছিল তাকে। ইমদাদুল হক মিলনের লেখা গল্পে এটি নির্মাণ করেছিলেন নন্দিত নির্মাতা ও অভিনেতা আফজাল হোসেন। সেখানে চৈতীর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন আফজাল হোসেন ও মনির খান শিমুল।
এই টেলিফিল্মের পর আর ক্যামেরার সামনে তাকে দাড়াতে দেখা যায় নি। তখনকার সময়ে এটাই ছিল তার শেষ কাজ। প্রায় ১৯ বছরের বিরতির পর সম্প্রতি আবারও ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন নব্বই দশক মাতানো চিরচেনা সেই বিজ্ঞাপনের মুখ চৈতি। ২৫ বছর আগে নিজেরই করা বার্জার পেইন্টসের সেই রঙ মাখানো বিজ্ঞাপনের সিক্যুয়েলে মডেল হয়ে আবারও ক্যামেরার সামনে দাড়িয়েছেন তিনি। এবারও তার সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন শিমুল।
নব্বই দশকে প্রচার হওয়া ’ভালবাসার রঙ’ স্লোগান নিয়ে সেই বিজ্ঞাপনের দুই মডেল শিমুল ও চৈতী দর্শকের মনে আজও স্মৃতির আয়নায় প্রিয়মুখ হয়ে আছেন।
সেই জুটিই আবার দেখা দিয়েছেন ২৫ বছর পর। দাম্পত্যের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মনের মাধুরী মেশানো রঙে রঙিন হয়েছিলো যে সংসার সেই সংসারের বসার ঘরটা আবারও গোলাপি আর শোবার ঘরটা আকাশের মতো নীল হয়ে উঠলো। তবে এবার পরিবারে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু মুখ, জন্ম নিয়েছে নতুন কিছু আনন্দমুখর মুহূর্ত। এখানে এই দম্পতির মেয়ের চরিত্রে দেখা গেল মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ খ্যাত জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীকে। আর এই বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করেছেন জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নির্মাতা আদনান আল রাজীব।
বিজ্ঞাপনটি প্রচারে আসার পর দারুণ সাড়া পড়েছে। ফেসবুকে এই টিভিসি নিয়ে চলছে স্মৃতির রোমন্থন। বিজ্ঞাপনটির নিচে হাজার হাজার দর্শক মন্তব্য করছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ফিরে গেছেন নব্বই দশকে ফেলে আসা অতীতে। দেশে বিদেশে থাকা আত্মীয়-বন্ধুদের ট্যাগ দিয়ে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে উঠছেন বিটিভির দিনগুলোর স্মরণে।
চৈতী বলেন, আমার ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে ইচ্ছা থাকলেও কাজে ফেরা হয় নি এতদিন। ২৫ বছর আগে করা সেই বিজ্ঞাপনের সূত্রেই আবারও একই কাজে ফেরা হলো।
তাই নিজের আগ্রহ থেকেই কাজটি করেছি। এই বিজ্ঞাপনটির সাথে অন্যরকম এক আবেগ জড়িত। নস্টালজিক একটি ব্যাপার আছে। আমি সম্মানিত বোধ করছি বার্জারের আয়োজনে। অনেকদিন পর তাদের জন্য শোবিজে ফেরা হলো। দীর্ঘদিন পর আমার প্রত্যাবর্তনে দর্শকরা যেভাবে রেসপন্স করেছেন সেটা সত্যিই আমার জন্য বিরাট আনন্দের ও প্রেরণার। আমি কিন্তু খুব বেশি কাজ করিনি। যে দু-চারটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি সেগুলো দর্শক এখনও মনে রেখেছেন। এটা দেখে সত্যি আমি অনেক আনন্দিত। এটাই তো কাজের অনুপ্রেরণা
তিনি আরও বলেন, ’১৯ বছর বিরতি শেষে যে কোনো কিছুতে প্রত্যাবর্তন করা অনেক আনন্দের। আমার কাছেও দারুণ লাগছে। আমি সম্মানিত বোধ করছি, বার্জার পুরনো সেই বিজ্ঞাপনটিকে নতুন করে নতুন গল্পে তৈরি করেছে বলে। দর্শকের কাছ থেকে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। উপভোগ করছি আমি এই ফেরা।’
যোগ করে তিনি আরও বলেন, নতুন করে যেটা ভালো লাগছে সেটা হলো দর্শকের সরাসরি প্রতিক্রিয়া। আমাদের সময় তো সেই সুযোগটা ছিল না। আমরা কাজ করতাম। দর্শক দেখে মনে রাখতেন। কোথাও হঠাৎ দেখা হলে কেউ কেউ অটোগ্রাফ নিতেন। কিন্তু এখন তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের হাত ধরে যে কোনো কাজের ফিডব্যাকটা সরাসরি দ্রুত পাওয়া যাচ্ছে।
শোবিজ জগত ছেড়ে দেওয়ার পর ২০০০ সাল থেকেই শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন চৈতি।
প্রায় ১৮ বছর ধানমন্ডির সানবীম স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন সেইসাথে নিজের সংসার সামলেছেন যার কারণে শোবিজ থেকে দূরে সরে থাকতে হয়েছে তার। চৈতির স্বামী ইমরান আসিফের বেশ সুখেই কাটছে দাম্পত্যজীবন। সেই দাম্পত্য জীবন আলো করে আছে দুই কন্যা। বড় মেয় ’এ লেভেল’ করছে। ছোট মেয়ে পড়ছে প্রথম শ্রেণিতে। সংসার, স্বামী ও সন্তান এই তিন ’স’ তেই এখন নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছেন নিজেকে।