Home / মিডিয়া নিউজ / আসিফকে দেখে আমরা বিন্দুমাত্র টের পাইনি ও এতটা খারাপ

আসিফকে দেখে আমরা বিন্দুমাত্র টের পাইনি ও এতটা খারাপ

টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের পরিচিত মুখ কাজী আসিফ রহমান। দেড় বছর প্রেমের পর ২০১৫ সালে

তিনি কানাডাপ্রবাসী শামীমা আক্তার অর্নিকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন যেতেই শুরু হয় সাংসারিক

টানাপড়েন। একপর্যায়ে অর্নি আদালতে আসিফের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেন। এরপর

রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে ১৫ এপ্রিল রাতে আসিফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিষয়টি এখন শোবিজ অঙ্গনে আলোচনার শীর্ষে। ঘটনার পর প্রিয়.কম-এর মুখোমুখি হন শামীমা আক্তার অর্নি। এ সময় তিনি ভালোবাসা, বিয়ে, সংসার জীবনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রিয়.কম: একটু অতীতে ফিরে যাই, আপনার সঙ্গে আসিফের পরিচয় কীভাবে?

শামীমা আক্তার অর্নি: আমাদের পরিচয় হয় ফেসবুকে, ২০১৪ সালে। এরপর আমাদের মাঝেমধ্যে কথা হতো। সেটা ধীরে ধীরে ভালোলাগায় রূপ নেয়। এরপর আমরা প্রেমের সম্পর্কে জড়াই। সময় হিসাব করে বললে সেটা দেড় বছর, মানে আমাদের প্রেম ছিল দেড় বছর। এরপর আমি বাংলাদেশে আসি। ২০১৫ সালে আমাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

প্রিয়.কম: আজ (২৩ এপ্রিল) সবাই জেনে গেল আপনার সঙ্গে আসিফের সম্পর্কের তিক্ততার কথা। তিনি এখন কারাগারে। নিশ্চয়ই অনেকটা সময় ধরেই এ সমস্যাগুলো দানা বেঁধেছে?

শামীমা আক্তার অর্নি: আসিফকে শোবিজের সবাই কিন্তু অতি ভদ্র একটা লেবাসে দেখে। আর ওর চেহারাটাও কিন্তু সে রকমই। বিয়ের আগে ওর সঙ্গে আমার যত দিন কথা হয়েছে, কখনোই আমার খটকা লাগেনি ওর কোনো বিষয়ে। সে বিয়ের আগে আমাকে অনেক বিষয়েই মিথ্যা কথা বলেছে, সেগুলো আমি বিয়ের পরপরই প্রমাণ পাই। যেমন—সে অস্ট্রেলিয়া থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছে, লন্ডনে তার ভাইয়ের সঙ্গে বিজনেস করছে। আমাকে বিয়ের আগে এটাও বলেছে, সে বিয়ের পর আর শোবিজে কাজ করবে না। কারণ বাংলাদেশে থাকার মতো সে পরিবেশ নেই। শোবিজের পরিবেশ আরও খারাপ। আমাকে বলত, ওর বাবা-মা ছোটবেলায় মারা গিয়েছেন। এ থেকে একটা সহানুভূতি ও সবসময় গেইন করত। সব মিলিয়ে তখন আমার কাছে মনে হয়েছে, ছেলেটা ভালো। আর আমি তো কানাডায় থাকি।

ওর সঙ্গে বিয়ের আগে সে রকম মেশা হয়নি। যার কারণে ছোট ছোট বিষয়গুলো কখনো লক্ষ করা হয়নি। সেদিক থেকে আমি বলব, সেটা আমার বোকামিই ছিল। সে কিন্তু আমাকে একটা সময় গিয়ে আমাদের জীবনের মুখ্য বিষয়গুলো নিয়ে বড় বড় ধরনের মিথ্যা বলেছে। সেটা আমি বাইরে থাকার কারণে ধরতে পারিনি। কিন্তু যখনই আমি দেশে আসতাম তখনই কোনো-না-কোনোভাবে বিষয়গুলো আমার চোখে আটকে যেত।

বিয়ের পর থেকেই আসিফ বদলে যেতে থাকেন, দাবি অর্নির।

প্রিয়.কম: যখন আপনি বুঝতে পারলেন আপনার প্রিয় মানুষটি আপনার সঙ্গেই বিভিন্নভাবে মিথ্যা ও ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিচ্ছে, তখন আপনার দিক থেকে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন?

শামীমা আক্তার অর্নি: যখন আমি বিষয়গুলো টের পাই, তখন আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। বিয়ের এক মাসের মধ্যেই ওর কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তা প্রকাশ পেতে থাকে। আমাদের বিয়ে হয়েছে ২০১৫ সালের আগস্টের ৭ তারিখ। কিন্তু আমাদের বিয়ের খবর গণমাধ্যমে এসেছে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ; এক মাস পরে। আসিফ আমাকে সবসময় বলত, ও বিয়ের বিষয়টা শোবিজে কখনো জানাবে না।

আমাদের বিয়েটা ঘরোয়া পরিবেশে হয়েছে, শোবিজের কাউকে দাওয়াতও দেওয়া হয়নি। আসিফের বক্তব্য ছিল, \’যেহেতু আমি কাউকে দাওয়াত দিতে পারছি না, সেটা আমার জন্য মান-সম্মানেরও বিষয়।\’ তাই আমরা ছোট করে একটা অনুষ্ঠান করি, যেখানে আমাদের শুধু দুই পরিবারের সদস্যরাই থাকবে। আমিও বিষয়টা মেনে নিয়েছি। বিয়ের এক মাসের মধ্যেই ওর কিছু অস্বাভাবিক আচরণ আমার চোখে পড়ে।

তখন আমি ওকে বলি, তুমি যে বিয়ে করেছো, সেটা সবাইকে জানাও। তোমার স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও যেসব মেয়ে সিঙ্গেল, তাদের গিয়ে বলছো তুমিও সিঙ্গেল। আমি বিষয়টা নিয়ে ওর সঙ্গে ভীষণ রাগারাগি করি। কারণ আমার কাছে প্রমাণ ছিল। তখন আসিফ আমার হাত-পা ধরে বলে, \’অর্নি, আমি সাথেই থাকব, চলো নিউজ করে দিই।\’ যার কারণে বিয়ের এক মাসে আমাদের বিয়ের নিউজটা হয়।

প্রিয়.কম: আসিফের \’অস্বাভাবিক আচরণ\’ আপনার চোখে পড়লে তাকে শুধরে নেওয়ার কথা বলেছিলেন?

শামীমা আক্তার অর্নি: ভুল মানুষের হতেই পারে, একজন স্ত্রী হিসেবে আমার কাজ ছিল স্বামীকে ভালোর পথে নিয়ে আসা। তখন আমি তাকে বলতাম তুমি নামাজ পড়ো। সে নামাজ পড়ত নিয়মিত, মানে আমাকে দেখাত, সে ঠিক হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার মূল উদ্দেশ্য ছিল আসলে কানাডা যাওয়া। সেটার জন্য আসলে যা যা করা লাগে, সেটাই সে করেছে।

কানাডার ভিসাটা যখন আসিফের হলো না, তখন আমি প্রেগন্যান্ট। এটা ২০১৭ সালের মে মাসের কথা বলছি। তখন থেকেই আমাদের সম্পর্কের \’আপ্‌স অ্যান্ড ডাউন\’ শুরু হয়ে গেছে। আসিফকে আমি ফোন দিলে কথা বলে না। আমি তো প্রেগন্যান্ট, বাচ্চার কোনো খবর নিবে না। কিন্তু টাকা-পয়সা চায় বিভিন্ন সময়। মাছ-মাংস খাওয়ার টাকা নেই, এসবসহ নানান ধরনের কথা সে আমাকে বলত। বিভিন্নভাবে আমার কাছ থেকে টাকা নিত।

আরেকটা কথা হচ্ছে, আমি যখন কনসিভ করি, সে তখন আমাকে মারধর করেছে। ওইবার দেশে আসার পর ওর ফোনে আমি বেশ কয়েকটি মেয়ের আপত্তিকর মেসেজ পেয়েছি; যা একজন স্ত্রী হিসেবে আমার দিক থেকে মেনে নেওয়া কষ্টকর ছিল। যদিও আসিফ আশা করেনি যে আমি ওর ফোন থেকে মেসেজগুলো দেখে ফেলব। তখন বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে একধরনের কথাকাটাকাটি হয়। তারপরও নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলাম।

এসবের পরও আমার কাছ থেকে তার টাকা-পয়সা নিতে হবে—এটা তার দিক থেকে কখনো অফ ছিল না। যাই হোক, আমি বাচ্চাটাকে নিয়ে কানাডা চলে যাই, আবার গত জানুয়ারিতে ফেরত আসি। আসার পরই সে আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চায়। আমি তখন তাকে বললাম, \’এখন তোমাকে এত টাকা দিতে পারব না। আমি ইতোমধ্যেই তোমাকে অনেক টাকা দিয়েছি।\’ সে আমাকে বলল, \’টাকা না দিতে পারলে তুমি আমার ঘরে থাকতে পারবা না। মেয়েকে নিয়ে কানাডা চলে যাও। তোমাকে ও মেয়েকে ভরণ-পোষণ দেওয়ার মতো টাকা আমার কাছে নেই।\’

আসিফের সঙ্গে বিয়ের আগেও অর্নির আরেকটি বিয়ে হয়েছিল। ছবি: অর্নি

প্রিয়.কম: আপনি কতদিন ধরে কানাডায় থাকেন? কী করছেন সেখানে?

শামীমা আক্তার অর্নি: আমি ১৭ বছর ধরে কানাডায় থাকি। ওখানে আমি রেজিস্টার্ড নার্স। আমি কয়েকটা এজেন্সির সঙ্গে আছি। এ ছাড়া একটি ক্লিনিকের সঙ্গেও আছি। পাশাপাশি আমি একটি হাসপাতালেও কাজ করতাম, যদিও আমি সেটা ছেড়ে দিয়েছি। আমি প্রেগন্যান্ট হওয়ার পর কিংবা মা হওয়ার পর থেকেই কাজের জায়গা থেকে খুব একটা প্রেসার নিইনি।

প্রিয়.কম: মডেল আসিফের সঙ্গে বিয়ের আগে আপনার আরেকটি বিয়ে হয়েছিল?

শামীমা আক্তার অর্নি: হ্যাঁ, আপনি যেটা শুনেছেন সেটা সত্যি। আসিফের সঙ্গে বিয়েটা ছিল আমার দিক থেকে দ্বিতীয় বিয়ে। তবে আমি এখন আর আমার সে অতীতের জীবনটা নিয়ে কথা বলতে চাই না। আরেকটা বিষয়, আসিফ আমার জীবনের সব জেনেই আমাকে বিয়ে করেছে। ওই জীবন নিয়ে আসিফের কোনোদিনও কোনো ধরনের আরগুমেন্ট ছিল না।

প্রিয়.কম: কিন্তু রুপালি পর্দার বেশির ভাগ মানুষদের জীবনে প্রেম, বিয়ে এসব ঠুনকো বিষয়। তারপরও কেন আপনি রুপালি পর্দার একজনকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন?

শামীমা আক্তার অর্নি: আসিফকে দেখে আমরা কেউই বিন্দুমাত্র টের পাইনি ও এতটা খারাপ। সেটা বোঝার মতো ক্ষমতা কারো ছিলও না। আজ ও যখন জেলহাজতে আটক, পুলিশ পর্যন্ত এসে বলছে, ও কী করেছে। পুলিশও ওকে নিয়ে কনফিউশনে আছে। তাদেরও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, ও এ ধরনের কাজ করতে পারে।

পুলিশের কাজ তো আসামিকে সন্দেহ করা, সেখানে তারাও বলতেছে, ছেলেটা দেখতে তো ভালোই। আসিফ ভদ্র একটা লেবাস ধরে থাকে। ওর লেবাসটা কেউ ধরতে পারে না। তাকে যে পাত্রে রাখা হবে, সে সেই পাত্রের আকার ধারণ করবে। যার কাছে ওর কোনো বেনিফিট থাকবে, ও তার পা ধরে বসে থাকবে। যদি কোনো বেনিফিট না থাকে, তাহলে তাকে চিনবেও না।

প্রিয়.কম: কিন্তু সংসার করতে গেলে তো কাউকে না কাউকে ছাড় দিতেই হয়, আপনারা এ ধরনের কাদা ছোড়াছুড়িতে না জড়িয়েও তো সমাধানে আসতে পারতেন।

শামীমা আক্তার অর্নি: আচ্ছা, আপনি গুড একটা টপিকসের কথা বলছেন, আমাদের বিয়ের পর পাঁচটি ঈদ গিয়েছে। আমি আমার হাজব্যান্ডের কাছ থেকে একটি জামাও নিইনি। সে আমাকে বিয়ের পর থেকে আজ পর্যন্ত একটি টাকা দিয়েও আমাকে সহযোগিতা করেনি। এরপরও আমি তার কাছ থেকে কোনো বিষয়ে সহযোগিতা পাওয়ার আশা করতে পারি? গত পহেলা বৈশাখের পরে আমরা বাচ্চাটা পাঁচ দিন হাসপাতালে ছিল, সে যে হেল্প করবে কিংবা বাচ্চাটার পাশে এসে দাঁড়াবে, সেটাও সে করেনি। কিন্তু ওই দিকে সে ঠিকই মালয়েশিয়াতে তার মতো ঘুরে বেড়িয়েছে।

অর্নি মনে করেন আসিফ পরিকল্পিতভাবেই সবকিছু ঘটিয়েছেন।

প্রিয়.কম: প্রায় তিন বছরের সংসার আপনাদের, কানাডা থাকলেও মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশে আসতেন। দূরত্বের কারণেই কি এ ধরনের একটি সংকট তৈরি হয়েছে?

শামীমা আক্তার অর্নি: আমি বাংলাদেশে আসতে চাইলে ও আমাকে প্রায়ই বলত, \’না তুমি বাংলাদেশে আসবে না।\’ সে আমাকে বলত, \’আমার কাজ আছে, টাকা নেই, তোমার আসার দরকার নাই।\’ এবার যখন আসছি, তার আগে সে আমাকে বলেছে, \’তুমি আসলে অবশ্যই আমাকে ২০ লাখ টাকা দিবা, না-হলে আমি তোমাকে বাসা থেকে লাথি মেরে বের করে দিব।\’ আমি ভাবছি, দূর, বাচ্চার চেহারা দেখলে ঠিক হয়ে যাবে। বিষয়টা হলো আসিফ ভাঙবে কিন্তু মচকাবে না। আমাদের প্রেমটা কিন্তু লং ডিস্টেন্সেই হয়েছিল। যার কারণে আমি এটাকে দায়ী মনে করছি না। আসিফের যে ইনটেশন কিংবা ওর যে গেম, সেটাকেই আমি দায়ী করছি।

প্রিয়.কম: একজন মানুষ হিসেবে বিষয়গুলো আপনাকে কতটা মানসিক টানাপড়েনের মধ্যে রেখেছে?

শামীমা আক্তার অর্নি: এ বিষয়টির কারণে আমাকে মানুষের কাছে ছোট হতে হচ্ছে, মানুষ আমাকে ফোন দিচ্ছে। কী হয়েছে, কেন হয়েছে, এটা তো হওয়ার কথা না। আমি তো একজন মেয়ে। যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তখন বেশির ভাগ মানুষ তার দিকেই আঙুল তোলে। কিন্তু আসিফ আমাকে দিনের পর দিন ইচ্ছে করেই টর্চার করে যাচ্ছিল, সেটাকে আমি তো প্রশ্রয় দিতে পারি না।

প্রিয়.কম: বিষয়টি নিয়ে আপনি এখন কী ভাবছেন?

শামীমা আক্তার অর্নি: আইন আইনের মতো করে চলবে। আমি একজন মা হিসেবে চাইব, আমার মেয়ের মাথার ওপরে তার পিতার হাতটা থাকুক। এখন পিতা যদি হাত রাখতে না চায়, কোর্ট যে সিদ্ধান্ত দিবে, সেটাই মেনে নিব। তবে এখন সবকিছুই নির্ভর করছে আসিফের ‍ওপর। ও যদি শুধরে আমার কাছে আসে, ঠিক আছে। কিন্তু আমি ওর মধ্যে এত কিছুর পর তেমন কোনো লক্ষণ দেখতে পাই না। আজ (২৩ এপ্রিল) জামিনের জন্য আসিফ গিয়েছিল, কিন্তু পায়নি। তবে আসছে ২৫ এপ্রিল আবার শুনানি আছে। তারপর বাকিটা বোঝা যাবে।

প্রিয়.কম: আসিফের পরিবার বিষয়টিকে কীভাবে দেখছে?

শামীমা আক্তার অর্নি: বিয়ের আগে আমি যখন বাংলাদেশে আসি, সেবার আমি কিন্তু বিয়ের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসিনি। তখন আসিফ আমাকে বলে, \’না, আমরা এবারই বিয়ে করব।\’ তখন আমার মা বলেছে, \’না, আমরা আরও দুই বছর সময় নিতে চাচ্ছি, এখনই বিয়ে দিব না।\’ কিন্তু আসিফের পরিবার থেকে জোর করার কারণেই বিয়েটা হয়ে গেল। বেশ কিছুদিন হলো আসিফের পরিবারের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই।

Check Also

আবারও ডি এ তায়েবের নায়িকা মাহি

নতুন আরও একটি সিনেমায় কাজ করতে যাচ্ছেন ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা মাহিয়া মাহি। সেই সিনেমার নাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *